ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক

ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক || একনজরে ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক ||


বেদের পরবর্তী অংশকে ব্রাহ্মণ বলে। এতে বৈদিক যাগযজ্ঞের বিভিন্ন নির্দেশ লিপিবদ্ধ আছে। ব্রাহ্মণের মূল আলোচ্য বিষয় দুই প্রকার – বিধি ও অর্থবাদ। তবে কোথাও কোথাও এর দশবিধ আলোচ্য বিষয় উল্লিখিত আছে। অথর্ববেদের ব্রাহ্মণ ‘সবচেয়ে কম’ এবং সামবেদের ব্রাহ্মণ সবচেয়ে বেশি।


ব্রাহ্মণের পরবর্তী অংশ আরণ্যক। অরণ্যে ইহা উক্ত বলে একে আরণ্যক বলা হয়। মূলত ব্রহ্মবিদ্যা লাভ এর আলোচ্য বিষয়। ত্রয়ীর আরণ্যক থাকলেও অথর্ববেদের কোনো আরণ্যক নেই।

।। একনজরে ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক।।

বিষয়- ব্রাহ্মণ

বিষয়বস্তু:-


কর্মচোদনা ব্রাহ্মণানি- আপস্তম্ব। অর্থাৎ বৈদিক কর্ম বা যাগযজ্ঞাদির নির্দেশ যে গ্রহে পাওয়া যায় তাই ব্রাহ্মণ।

ব্রাহ্মণের অংশ :-


তিনটি। ব্রাহ্মণ , আরণ্যক ও উপনিষদ।

রচনাকাল :-

৮০০ – ৬০০ খ্রী.পূ. (ম্যাক্সমুলার) , ২০০০ খ্রী, পু, – ১৫০০ খ্রী, (উইন্টারনিৎস)

আলোচ্য বিষয় :-

১.বিধি, ২.অর্থবাদ, ৩.নিন্দা, ৪.প্রশংসা, ৫.পুরাকল্প এবং ৬.পরকৃতি (আপস্তম্বের মত)। ১.বিধি ও ২.অর্থবাদ (সায়ণ)।

শাবরভাষ্য মতে আলোচ‍্য বিষয়:-


১.হেতু, ২.নির্বচন, ৩.নিন্দা, ৪.প্রশংসা, ৫.সংশয়, ৬.বিধি, ৭.পরক্রিয়া,৮. পুরাকল্প, ৯.ব্যবধারণ কল্পনা, ১০.উপমান।

ঋগ্বেদের ব্রাহ্মণ:-

১. ঐতরেয় ব্রাহ্মণ (৫ অধ্যায়যুক্ত ৮টি পঞ্জিকা, মোট ৪০টি অধ্যায়। দ্রষ্টা – ইতরার ঋগ্বেদের ব্রাহ্মণ পুত্র মহিদাস), ২. কৌষীতকি বা শাঙ্খায়ণ ব্রাহ্মণ (৩০টি অধ্যায়। দ্রষ্টা – কৌষীকত ঋষি)।

সামবেদের ব্রাহ্মণ :-


প্রধানতঃ দুটি – ১. তাণ্ড্য বা প্রৌঢ় বা পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণ (কৌথুমী শাখা) এবং ২. তলবকার বা জৈমিনীয় বা ষড়বিংশ ব্রাহ্মণ (জৈমিনীয় শাখা)।

সায়ণমতে সামবেদের ব্রাহ্মণ:-

আটটি -১. প্রৌঢ় বা পঞ্চবিংশ, ২. ষড়বিংশ , ৩. সামবিধান, ৪. আর্ষেয়, ৫. দৈবত,৬. মন্ত্র বা উপনিষদ বা ছান্দোগ্য, ৭. সংহিতোপনিষদ এবং ৮. বংশব্রাহ্মণ।

কৃষ্ণ যজুর্বেদের ব্রাহ্মণ:-


একটি। তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ। তিনখণ্ডে বিভক্ত।

শুক্ল যজুর্বেদের ব্রাহ্মণ :-


একটি। শতপথ ব্রাহ্মণ (১০৪ অধ্যায়) – কাণ্ব শাখা। শতপথ ব্রাহ্মণ (১০০ অধ্যায়) মাধ্যন্দিন শাখা। এটি ১৪টি কাণ্ডে বিভক্ত।

অথর্ববেদের ব্রাহ্মণ:-


একটি। গোপথ ব্রাহ্মণ (২টি কাণ্ড ১১টি প্রপাঠক)।

বৃহত্তম ব্রাহ্মণ:-


শতপথ ব্রাহ্মণ। শত অধ্যায়ে বিভক্ত তাই এটি শতপথ।

ঐতরেয় ব্রাহ্মণ:-


সপ্তম পঞ্জিকায় হরিশ্চন্দ্র, রোহিতাশ্ব এবং শুনঃশেপের কাহিনি। শেষের দিকের অধ্যায়ে জনমেজয়, মনুপুত্র শর্যাতি, দুষ্যন্তপুত্র ভরতের কাহিনি আছে।

শতপথ ব্রাহ্মণ:-


দর্শপূর্ণমাস, পিণ্ডপিতৃ, চাতুর্মাস্য যাগ, সোমযাগ, রাজসূয় যজ্ঞ, মনুমৎসকথা প্রভৃতি।

অণুব্রাহ্মণ:-


অপ্রধান ব্রাহ্মণ।

।। একনজরে ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক।।

আরণ‍্যক :-


কর্ম ও জ্ঞানের আধ্যাত্মিক আলোচনা বিষয়ক ব্রাহ্মণভাগকে আরণ্যক বলে। “অরণ্যে এব পাঠাত্বাদারন‍্যকম্ ইত‍্যর্যতে” – সায়ণ। গভীর ও দুরধিগম্য ব্রহ্মতত্ত্ব বিষয়ক জ্ঞান যেখানে আলোচিত হয়েছে তাই আরণ্যক। ইহা গদ্যাত্মক।

ঋগ্বেদের আরণ‍্যক:-


দুটি। ১, ঐতরেয় (৫টি ভাগ), এবং ২. কৌষীতকি বা শাঙ্খায়ন (১৫টি অধ্যায়)।

সামবেদের আরণ‍্যক:-


ছান্দোগ্য আরণ্যক।

কৃষ্ণ যজুর্বেদের আরণ‍্যক:-


তৈত্তিরীয় আরণ্যক (তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণের শেষাংশ)।

শুক্লযজুর্বেদের আরণ‍্যক:-


বৃহদারণ্যক (শতপথ ব্রাহ্মণের ১৪শ খণ্ড)।

অথর্ববেদের আরণ‍্যক:-


নেই।

1 thought on “ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক”

  1. এখানে Teachmint Apps এর সাহায্যে আধুনিক পদ্ধতিতে Online এ সংস্কৃত ব্যাকরণের শব্দরূপ, ধাতুরূপ, সন্ধি, অনুবাদ, কারক, সমাস, প্রত্যয়, অশুদ্ধি সংশোধন, এককথায় প্রকাশ ইত্যাদি Topic এর উপর পৃথক্ পৃথক্ Course করানো হয়। এবং PDF FILE পাওয়া যায়।
    আমাদের Telegram Group
    https://t.me/joinchat/SK-3xQOYL45lMzM1

    Reply

Leave a Reply

%d bloggers like this: