অগ্নিপুরাণ সম্পর্কে আলোচনা করা হল। অগ্নিপুরাণ pdf download দেওয়া হল।
অগ্নিপুরাণ
সমগ্র পুরাণ সাহিত্যের মধ্যে অগ্নিপুরাণ কে প্রাচীন পৌরাণিক ও সাহিত্যবিদ্যার কোষগ্রন্থ বলা যায়। গ্রন্থে প্রদত্ত কিংবদন্তি অনুযায়ী মুনি বশিষ্ট সর্বজ্ঞ হওয়ার অভিলাষে অগ্নিদেবকে সর্ববিদ্যার উপদেশ দান করতে অনুরোধ করেছিলেন। তখন অগ্নি ১৬০০০ শ্লোকে সকল বিদ্যা সম্পর্কে যে সংক্ষিপ্ত উপদেশ দান করেন, তাই অগ্নিপুরাণ নামে খ্যাত।
বর্তমানে পুরানে ১১৫০০ শ্লোক পাওয়া যায়। কারো কারো অনুমান মূল অগ্নিপুরান লুপ্ত এবং বর্তমান গ্রন্থটি অর্বাচীন কালের রচনা। টীকাকার মহেশ্বর ও বিদ্যাভূষণ অগ্নি ও বহ্নি পুরানকে অভিন্ন গ্রন্থ বলেছেন। আবার কারো কারো মতে বহ্নি পুরানই মূল অাগ্নেয় পুরাণ। বল্লাল সেনের ‘দানসাগর’ গ্রন্থে অভিযোগ করেছেন যে, অগ্নিও গরুড় পুরাণ গ্রন্থ দুটি ধূর্ত তান্ত্রিকগন কর্তৃক লোক প্রবঞ্চনার অভিপ্রায়ে জাল করা হয়েছে। কিন্তু তিনি অগ্নিপুরাণ থেকে যেসকল শ্লোক উদ্ধৃত করেছেন, সেগুলো বর্ধমান গ্রন্থে পাওয়া যায় না। অগ্নিপুরাণ বর্তমানে যেরূপে আমাদের হস্তগত, তার মধ্যে মূল ও প্রক্ষিপ্ত অংশ নিরূপণ করা দুঃসাধ্য।
আলোচ্য পুরাণে বিবিধ পৌরাণিক কাহিনী, নানান বিদ্যার সারসূচি, স্মৃতির উদ্ধৃতি, বিবিধ শাস্ত্রের আলোচনা, রামায়ণ, মহাভারত এবং হরিবংশ এর অনুকরণে বিষ্ণুর নানার অবতারের( রাম,কৃষ্ণ প্রভৃতি ) চরিত্র বর্ণনা, ভাগবত,কূর্ম, বায়ু ও মার্কন্ডেয় পুরাণের বিবিধ বিষয়ের পূর্ণ বর্ণনা, বংশানুচরিত, সৃষ্টিতত্ত্ব, ভূগোল বর্ণনা, অমরকোষ, পিঙ্গলের ছন্দঃশাস্ত্র, অলঙ্কারশাস্ত্র, ভগবতগীতা, মনুযাজ্ঞবল্ক্য, পরাশরের স্মৃতি, পালকাব্যের হস্তায়ুবেদ, বৃহৎসংহিতা, বাগভট্টের অষ্টাঙ্গহৃদয়সংগীতা, কলাপ্য ব্যাকরন, কোষ চাণক্যের রাজনীতি শাস্ত্র,নকুল রচিত অশ্বচিকিৎসা প্রভৃতি বহুবিধ শাস্ত্রের সারসংকলন পাওয়া যায়।
সাধারণ বিচারে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের অনুগত রচনা হলেও তান্ত্রিক উপাসনা পদ্ধতি, লিঙ্গ পূজা, দুর্গা আরাধনা প্রভৃতি বিষয়ও আলোচিত হয়েছে।